শ্রীবরদীতে হাতির তাণ্ডব, উদাসীন বন বিভাগ
শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ঘেঁষা এলাকায় দিন দিন বেড়ে চলছে বন্য হাতির তাণ্ডব। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার চাষযোগ্য জমি, ফসল ও বসতবাড়ি।স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করেছেন, হাতি ও মানুষের এই দ্বন্দ্ব কমাতে বন বিভাগ কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষ।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের মালাকোচা, হাতিবর, সিংগিজানি, সোনাঝড়ি, ঝুলগাওসহ কয়েকটি গ্রাম দীর্ঘদিন ধরেই বন্য হাতির আক্রমণের শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন রাতের আঁধারে ১৫ থেকে ২০টি বন্য হাতি পাহাড় থেকে নেমে এসে ফসলি জমিতে ঢুকে ধান, আখসহ নানা ফসল নষ্ট করছে। অনেক সময় হাতিরা ঘরবাড়িরও ক্ষতি করে।ভুক্তভোগী কৃষক ফিরু মিয়া বলেন, ‘এই সপ্তাহে তিনবার হাতির পাল আমাদের জমির ধান খেয়ে ফেলেছে। প্রায় ৬০ শতক জমির ফসল শেষ হয়ে গেছে। বন বিভাগে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। প্রতি বছর হাতি আমার জমি ক্ষয়ক্ষতি করে কিন্তু একবারও ক্ষতিপূরণ পাইনি।’একই গ্রামের কৃষক রুমান জানান, ‘আমরা নিজেরা ড্রাম বাজিয়ে আর মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়াই। বন বিভাগের লোকজন শুধু দূর থেকে দেখে যায়।’রানীশিমুল ইউনিয়নের বাসিন্দা রাকিব বলেন, ‘বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালালে হাতি ক্ষয়ক্ষতি কম করে। কিন্তু বন বিভাগ থেকে বৈদ্যুতিক বেড়া বা বাতি জ্বালানো নিষেধ করা হয়েছে। আমরা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্ধকারে হাতি তাড়াই। কিন্তু বন বিভাগ এখানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না।’মালাকোচা এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি বলেন, ‘আগে হাতি প্রতিরোধে বন বিভাগ থেকে কেরোসিন দিয়ে সহযোগিতা করলেও এবার আমরা কিছুই পাইনি।’এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে এই সমস্যা চলছে। আমরা বহুবার বন বিভাগকে জানিয়েছি কিন্তু তারা শুধু আশ্বাস দেয়। কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়নি।’এ বিষয়ে বালিজুড়ি বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘হাতির চলাচল সীমান্তের ওপারে থাকে। আমরা স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি এবং ক্ষতির পরিমাণ যাচাই করে ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব পাঠাচ্ছি।’