পরীক্ষা বন্ধ রেখে ইউজিসিতে আন্দোলনে গেলেন ৭ শিক্ষকদের একাংশ
ঢাকা কলেজ প্রতিনিধি: রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধীতা করে পরীক্ষা বন্ধ রেখেই ইউজিসিতে আন্দোলনে সাত কলেজ শিক্ষকদের একাংশ। এমনকি ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য বরাদ্দকৃত কলেজ বাস নিয়ে আন্দোলনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। এতে ভোগান্তিতে ও মানসিক দুশ্চিতায় পড়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।সংশ্লিষ্টদের সূত্রমতে, পূর্ব ঘোষিত নোটিশ ছাড়াই বেশিরভাগ বিভাগের ক্লাস- পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১১টার পরে সাত কলেজের কিছু সংখ্যক শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) কর্মসূচি পালন করছেন। বাকি শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। তারা ক্লাস-পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছেন। তবে কলেজ সমূহের কিছু সংখ্যক বিভাগে শিক্ষকেরা ক্লাস -পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন । কিছু বিভাগে পরীক্ষার সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ২০২২-২৩ সেশনের রিদয় সরকার বলেন, এর আগে আমাদের ইসলামী ইতিহাস বিভাগের ৬১৩ বিষয় কোডের একটা পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয় নাই। গতদিনের পরীক্ষা সহ আজকে আমাদের দু্ইটা পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। আজকে সবাই ক্যাম্পাসে আসার পরে জানতে পারে যে পরীক্ষা হবে না। কোন নোটিশ ছাড়াও পরীক্ষা শুর হওয়ার ২০ মিনিট আগে বিভাগ থেকে জানায় পরীক্ষা হবে না। পরীক্ষা বন্ধ করার কারণ বলছে জরুরি ট্রেনিংয়ের জন্য । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের এক শিক্ষার্থী বলেন, ইন্টারমিডিয়েটে ক্লাস শেষ হওয়ার পর কলেজ বাস তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয়। কিন্তু আজ ইন্টারমিডিয়েট শিক্ষার্থীদের বাস ব্যবহার করে শিক্ষকেরা আন্দোলনে গেল, এর ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগন্তির সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকেরা তাদের বাস থেকে জোর করে নামিয়ে দিয়েছে। শিক্ষর্থীদের বাস তারা কোন যুক্তিতে ব্যবহার করবে এটা আমার বুঝতে কষ্ট হচ্ছে। এখন অনার্সের বেশিরভাগ বিভাগের টেস্ট পরীক্ষা, ইনকোর্স চলমান এখন এসময় শিক্ষকেরা যেহেতু আন্দোলনে গেল এর পরিপ্রেক্ষিতে নোটিশ ছাড়াই ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেল।এছাড়াও গতকাল শিক্ষকদের আরেকটি মিটিংয়ের কারণে বিভাগের মামারা আমাদের পরীক্ষার হলে গার্ড দিয়েছে। যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এটা ইতিপূর্বে আগে কখনই ঘটেনি।পূর্ব ঘোষিত নোটিশ ছাড়াই পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রফিকুল আলম বলেন, ইন্টারমিডিয়েটে আমাদের টিচাররা সবাই ক্লাস নিয়েছে। আর সব ইয়ারে তো এখন টেস্ট পরিক্ষা চলতেছে। কিছু পরিক্ষা স্থগিত করা হয়েছে কারণ সাত কলেজের সকল শিক্ষকেরা ইউজিসিতে চলে আসছে। যার যার ডিপার্টমেন্টে সকালে ক্লাস পরিক্ষা স্থগিত ঘোষণার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে নোটিশটি আগে দিলে ভালো হতো। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং এর জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।আমাদের অস্তিত্ব যদি না থাকে কলেজই না থাকে আমরা চাইলে পরিক্ষা পরেও নিতে পারি প্রয়োজনে আমরা শনিবার দিন পরিক্ষা নিবো- জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় হউক তবে সেটা হোক এই সাত কলেজের বর্তমান অবস্থা বজায় রেখে। আমরা চাই এই সাত কলেজের সাতন্ত্র বজায় থাকুক। সাত কলেজ সাত কলেজের মতোই থাকুক শুধু একটি অ্যাফেলিয়েটেড বিশ্ববিদ্যালয় হোক।