সমঝোতা ছাড়াই শেষ হলো পাক-আফগান সংলাপ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের শান্তি সংলাপ কোনো চুক্তি বা সমঝোতা ছাড়াই ভেস্তে গেছে।৮ নভেম্বর শনিবার পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ পাকিস্তানি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সংলাপ সম্পূর্ণভাবে অচলাবস্থায় পৌঁছেছে।তিনি বলেন, একটা পরিপূর্ণ অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমাদের সংলাপ অনির্দিষ্ট পর্যায়ে পৌঁছেছে, এর আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিরা তৃতীয় দফায় সংলাপে বসেছিলেন। আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর। তবে প্রত্যাশিত চুক্তি ছাড়াই সংলাপ শেষ হয়।কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। দুই দেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে খাজা আসিফ বলেন, আমরা সন্ত্রাস দমন এবং সীমান্ত নিরাপত্তায় আফগানিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছিলাম এবং কাতার-তুরস্ক আমাদের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। এমনকি আফগান প্রতিনিধিরাও মৌখিকভাবে সম্মতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু যখনই চুক্তি স্বাক্ষরের প্রসঙ্গ উঠল, তারা পিছু হটে গেলেন।পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনা কি লিখিত চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক ছাড়া হতে পারে?খাজা আসিফ বলেন, আমাদের একমাত্র দাবি ছিল, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড যেন পাকিস্তানে হামলার জন্য ব্যবহার না হয়। কাবুল সেই নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। ভবিষ্যতে যদি আফগান ভূখণ্ড থেকে কোনো হামলা হয়, আমরা তার যথাযথ জবাব দেবো।২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর থেকেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কের অবনতি ঘটে। দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়নের মূল কারণ তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এই সশস্ত্র গোষ্ঠী পাকিস্তানে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে কয়েক হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।পাকিস্তানের অভিযোগ, কাবুলের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও মদত দিচ্ছে। গত ৯ অক্টোবর টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদসহ কয়েকজনকে হত্যা করে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। এর পাল্টা জবাবে আফগান সেনারা ১১ অক্টোবর সীমান্তবর্তী চৌকিতে হামলা চালায়, যা চার দিন ধরে চলে।এরপর ১৫ অক্টোবর কাতারের দোহায় শান্তি সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা পরবর্তীতে ইস্তাম্বুলে স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংলাপ কোনো অগ্রগতি ছাড়াই ভেস্তে যায়।