• ঢাকা
  • |
  • রবিবার ২রা অগ্রহায়ণ ১৪৩২ দুপুর ০২:৩১:৫৯ (16-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধন নিয়ে অস্থিরতা, আরেক বিচারপতির পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের পার্লামেন্টে পাস হওয়া বিতর্কিত ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনীর জেরে বিচারবিভাগে ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। সংশোধনী পাসের পরপরই সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির পদত্যাগের ঘটনায় আলোড়ন তৈরি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (১৫ নভেম্বর) নতুন করে পদত্যাগ করলেন লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি শামস মাহমুদ মির্জা। বিতর্কিত সংশোধনীর পর দেশটির কোনো হাইকোর্ট থেকে পদত্যাগ করা তিনিই প্রথম বিচারপতি।পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচারপতি মির্জা তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেছেন যে সর্বশেষ সাংবিধানিক পরিবর্তনের পর ‘বিবেকের তাড়নায় দায়িত্ব পালন করা আর সম্ভব নয়’। ২০১৪ সালে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মির্জার অবসর নেওয়ার কথা ছিল ২০২৮ সালে।বিচারপতি শামস মাহমুদ মির্জা ছিলেন প্রয়াত বিচারপতি জিয়া মাহমুদ মির্জার পুত্র। জিয়া মাহমুদ মির্জা ছিলেন পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং ১৯৯৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে বরখাস্ত করার বিরুদ্ধে ভিন্নমত প্রদানকারী একমাত্র বিচারপতি।২৭তম সংশোধনীকে ঘিরে আইনজীবী মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। লাহোর হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে সংশোধনীকে ‘উচ্চ আদালতকে খণ্ড-বিখণ্ড করার উদ্যোগ’ এবং ‘সংবিধানকে কার্যত সমাহিত করার প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে। তারা বিচারপতিদের সম্মান রক্ষায় প্রয়োজন হলে পদত্যাগের আহ্বানও জানিয়েছে। পাশাপাশি সোমবার পূর্ণদিবস ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দুই সিনিয়র বিচারপতি মনসুর আলী শাহ ও আতহার মিনাল্লাহ সংশোধনীকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর গুরুতর হুমকি আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেছেন। এদিকে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের দুই বিচারপতি মোহসিন আখতার কায়ানি ও সামান রাফাত ইমতিয়াজও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে আগামী মাস থেকে তারা আদালতে নিয়মিত উপস্থিত নাও থাকতে পারেন।আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন সংশোধনী পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থায় দুটি বড় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে—বিচারপতিদের বদলি এবং সাংবিধানিক মামলার বিচার কাঠামো। সবচেয়ে বিতর্কিত ধারা হলো ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট (এফসিসি) গঠন, যা গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক মামলার চূড়ান্ত রায় দেবে এবং যার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টসহ সব আদালতের জন্য বাধ্যতামূলক হবে। এভাবে সুপ্রিম কোর্টকে কার্যত কেবল নাগরিক মামলার সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে।আইসিজে এই সংশোধনীকে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ওপর ‘স্পষ্ট আক্রমণ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিচারব্যবস্থা এখন এক নজিরবিহীন সংকটের মুখোমুখি, যার ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।