• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বিকাল ০৪:৩৪:০৫ (19-Nov-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

অবহেলায় হারাতে বসেছে বাংলা গদ্যের রূপকার প্রমথ চৌধুরীর ভিটা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি: বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে কিছু নাম যুগ-যুগান্তরের উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়ে থাকে। যাদের সৃষ্টি শুধু কলমে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তারা বদলে দেন ভাষার প্রবাহ, সংস্কৃতির ধারা এবং চিন্তার দিগন্ত। তেমনই এক অনন্য নাম প্রমথ চৌধুরী। যিনি আধুনিক বাংলা গদ্যের কারিগর, চলিত ভাষার পথিকৃৎ এবং সাহিত্যজগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র।এই মহীরুহের জন্মভূমি পাবনার চাটমোহরের হরিপুর গ্রাম। যে মাটিতে শৈশব কাটিয়েছিলেন প্রমথ চৌধুরী, সেই ভিটাই আজ দাঁড়িয়ে আছে অবহেলার ভারে নুয়ে। ভিটা নয়, যেন হারানো ইতিহাসের এক ক্ষয়িষ্ণু প্রতিচ্ছবি।একসময় দর্শনীয় যে বসতভিটা স্মৃতি সংরক্ষণের কেন্দ্র হওয়ার কথা, আজ তা জঙ্গলে ঢেকে গেছে। ভাঙা দেয়াল, জরাজীর্ণ কাঠামো আর ধূলোয় মিশে যাওয়া অতীত যেন নীরব সাক্ষী হয়ে আছে আমাদের উদাসীনতার।সম্প্রতি স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রশাসনের নজরে আসে বসতভিটা দখলের অভিযোগ। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে যদিও দখলমুক্ত করা হয়, কিন্তু এরপর আর কোনো স্থায়ী উদ্যোগ দেখা যায়নি। ফলে প্রতিদিনই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যের এই শেষ চিহ্ন।যে বাড়ি থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন বাংলা ভাষার এক পথিকৃৎ, সেটির আজ এই করুণ অবস্থা ভাবিয়ে তোলে সাহিত্যপ্রেমীদের। এখান থেকেই জন্ম নিয়েছিল এক ভাবুক তরুণ, যাঁর হাতে বাংলা গদ্য পেয়েছিল স্বচ্ছতা, আধুনিকতা ও সৌন্দর্যের নতুন পরিভাষা। আজ সেই উৎসস্থলই হারিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়।স্থানীয়দের দাবি, শুধু দখলমুক্ত করাই যথেষ্ট নয়। ধ্বংসপ্রায় এই বসতভিটাকে রক্ষা করতে প্রয়োজন তাৎক্ষণিক প্রশাসনিক উদ্যোগ, সরকারি বরাদ্দ এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।অর্থ সংকটে ধুঁকছে প্রমথ চৌধুরী স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ। তারা চায়, এখানে হোক স্মৃতি সংগ্রহশালা, যেখানে থাকবে তাঁর বই, ছবি, দলিল ও সাহিত্যসম্পদ। অনেকেই মনে করছেন, সরকার চাইলে এখানে প্রমথ চৌধুরীর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করাও সম্ভব।