অনুদানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ, এখন শুরু আসল লড়াই: তাসনিম জারা
নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচনি ব্যয় মেটাতে প্রায় ৪৭ লাখ টাকা অনুদান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২৯ ঘণ্টায় পূরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) মনোনীত ঢাকা-৯ আসনের এমপি প্রার্থী এবং দলটির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা। এজন্য ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী কর্মপরিকল্পনা জানিয়েছেন তাসনিম জারা।২৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে তিনি এসব তথ্য জানান।তাসনিম জারা বলেন, ‘আমাদের ফান্ড রেইজিং লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৪৭ লাখ টাকা আপনারা মাত্র ২৯ ঘণ্টায় পূরণ করে ফেলেছেন। আপনাদের এই অভূতপূর্ব সাড়া পুরোনো রাজনৈতিক ধারার মূলে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। আমরা আর কোনো অনুদান গ্রহণ করছি না।’তিনি বলেন, ‘এখন শুরু হচ্ছে আসল লড়াই। অধিকাংশ প্রার্থী এই নির্বাচনে ১০ থেকে ৫০ কোটি টাকা খরচ করবেন। অনেকে বলেন টাকা দিয়ে ভোট কেনা যায়। কিন্তু তারা একটি বিষয় ভুলে গেছেন, আমাদের সঙ্গে আছেন আপনারা, যারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিজের পকেটের পয়সাও খরচ করতে রাজি।’এখন আমরা কীভাবে আগাবো?এই এনসিপি নেতা বলেন, ‘হিসাব খুব পরিষ্কার। ঢাকা-৯ আসনে প্রায় ৫ লাখ ভোটার। একজন প্রার্থী হিসেবে আমি যদি দিনে ১২ ঘণ্টা হেঁটে হেঁটে প্রতিটি পরিবারের সঙ্গে ৫ মিনিট করেও কথা বলি, তবে দিনে সর্বোচ্চ ১০০-১১০টি পরিবারের কাছে পৌঁছাতে পারবো। পুরো নির্বাচনি প্রচারণার সময়ে আমি বড়জোর ৪ হাজার পরিবারের কাছে যেতে পারবো। কয়েক লাখ পরিবারের কাছে আমাদের মেসেজ পৌঁছাবে না।’তিনি বলেন, ‘আমরা টাকার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করতে এসেছি, তাই আমরা পেইড কর্মী নিয়োগ দেবো না। নতুন রাজনীতি গড়ার এই লড়াইয়ে জিততে হলে, মানুষের কাছে আমাদের কথা পৌঁছাতে হলে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা অপরিহার্য।’তাসনিম জারা বলেন, ‘আপনাদের অনেকেই হয়তো ঢাকা ৯ এর ভোটার নন, কিন্তু আপনাদের আত্মীয়, বন্ধু, সহকর্মী বা পরিচিত কেউ না কেউ এই এলাকায় থাকেন। একজন পরিচিত মানুষের একটি কথা অনেক সময় পোস্টার, ব্যানার, বা টাকা খরচ করা প্রচারণার চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হয়। আমি এই ক্যাম্পেইনে নিয়ম মেনে পোস্টার লাগাইনি। অন্য প্রার্থীরা লাগিয়েছেন। এই অসমতা কাটাতেও আপনার একটা ফোন কল সাহায্য করতে পারে।’তিনি বলেন, ‘এছাড়া আপনাদের কাছে আমার আরও দুইটি সুনির্দিষ্ট আহ্বান আছে: ১. সপ্তাহে মাত্র ৪-৮ ঘণ্টা সময় দিন আমাদের হয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার জন্য। আপনার দুটি কথা একটি পেইড বিলবোর্ডের চেয়ে হাজার গুণ শক্তিশালী হবে। একা একা নয়, আপনি ট্রেনিং নিয়ে একটি টিমের সঙ্গে এই কাজটি করবেন। আগ্রহী হলে এই গ্রুপে জয়েন করুন: www.facebook.com/groups/2345409419262980‘২. পোলিং এজেন্ট হিসেবে কিংবা নির্বাচনের দিন ভোটারদের সহায়তা করতে আমাদের টিমে যোগ দিন। এক্ষেত্রেও আপনি ট্রেনিং নিয়ে একটি গ্রুপের অংশ হয়ে কাজ করবেন। ভোটের দিন প্রতিটি বুথে আমাদের এমন সাহসী মানুষ প্রয়োজন যারা অন্যায়ের সামনে মাথা নত করবেন না। আগ্রহীরা এই গ্রুপে জয়েন করুন: www.facebook.com/groups/1393019715882509 আমরা এক সঙ্গে প্রমাণ করবো জনগণের সম্মিলিত শক্তির সামনে কোটি কোটি কালো টাকা কতটা অসহায়।’তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, এই ফান্ডের প্রতিটি পয়সার হিসাব হবে স্বচ্ছ। এই স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা নিচের পদক্ষেপগুলো মেনে চলছি:১. আমরা কোনো ক্যাশ ডোনেশন গ্রহণ করছি না। প্রতিটি অনুদান একটি মাত্র বিকাশ ও একটি মাত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আসছে, যার রেকর্ড সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এটি ভবিষ্যতে যাচাই করা যাবে।২. কোন মাধ্যমে কত টাকা আসছে, তা আমরা আপনাদের নিয়মিত জানাচ্ছি। এই সমস্ত নথিপত্র আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেব, যাতে তারা পূর্ণ স্বচ্ছতা যাচাই করতে পারে।৩. আমরা যে বিকাশ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অনুদান নিচ্ছি, সেখানে আমাদের ব্যক্তিগত কোনো লেনদেন করা হয় না। অ্যাকাউন্ট দুইটি নতুন। হিসাব শূন্য থেকে শুরু হয়েছে। এই অ্যাকাউন্টগুলোর ব্যালান্সের ১০০ শতাংশ অর্থই আপনাদের অনুদান। এতে করে অন্য কোনো টাকা এখানে মিশে যাওয়ার বা হিসাব গোলমাল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।৪. সংগৃহীত অর্থ ঠিক কোন কোন খাতে কতটুকু ব্যয় করা হবে, তা স্পষ্ট করে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে।’