বিনোদন ডেস্ক: শোবিজ অঙ্গনে এমন কিছু নাম রয়েছে যারা শুধু শিল্পী হিসেবেই পরিচিত নন বরং তারা ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়ের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করে তারা দেশের জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন। তাদের সাহস, আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম আজও সমানভাবে অনুপ্রেরণা দেয়। মুক্তিযুদ্ধের লড়াকু সৈনিকরা স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। সেইসব নায়ক পরিচালকদের কয়কজনকে নিয়ে আজকের আয়োজন।

ফারুক


আকবর হোসেন পাঠান দুলু শোবিজ অঙ্গনে নায়ক ফারুক নামে পরিচিত। নন্দিত এ অভিনেতা একসময় পুরান ঢাকার মালি টোলায় দুলু গুন্ডা নামে পরিচিত ছিলেন। ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা নাদেরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং যুদ্ধ শেষে আবারও অভিনয়ে ফিরে আসেন। স্বাধীনতার বছরে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু হয় ফারুকের।
সোহেল রানা
মাসুদ পারভেজ যিনি চলচ্চিত্র অঙ্গনে সোহেল রানা নামে পরিচিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। তিনি দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ প্রযোজনা করেন। ১৯৭৩ সালে ‘মাসুদ রানা’ ছবির মাধ্যমে নায়ক হিসেবে তার অভিনয় জীবনের সূচনা।
খসরু
কামরুল আলম খান হলেন বাংলাদেশের একজন গেরিলা যোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক কর্মী। যিনি খসরু নামে অধিক পরিচিত। তিনি এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঢাকা অঞ্চলের গেরিলা বাহিনীর অধিনায়ক ছিলেন। তিনি 'ওরা ১১ জন' চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
জাফর ইকবাল
ঢালিউডের অন্যতম স্টাইলিশ হিরো ও কণ্ঠশিল্পী জাফর ইকবাল ৮০ দশকের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। ১৯৭১ সালে তিনি সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ৭০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে তিনি নিয়মিত চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘আপন পর’।
জসীম
দেশের অ্যাকশন ছবির পথিকৃৎ বলা হয় অভিনেতা জসীমকে। তিনিও মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি সামরিক ভূমিকায় পালন করেন। কলেজ শিক্ষার্থী থাকাকালীন সেক্টর দুইয়ের অধীনে মেজর এটিএম হায়দারের নেতৃত্বে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। বাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে দেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার।
হুমায়ূন ফরীদি
বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি ১৯৭১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক কেমিস্ট্রি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। দেশে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় দেশকে রক্ষার জন্য পড়ার টেবিল ছেড়ে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। একইসঙ্গে যুক্ত হন মঞ্চ ও থিয়েটারে। ছাত্র অবস্থাতেই তিনি নাটকে অভিনয় শুরু করেন। তবে টেলিভিশনে তার অভিষেক ঘটে ‘নিখোঁজ সংবাদ’ নাটকের মাধ্যমে।
আসাদুজ্জামান নূর
বাকের ভাই খ্যাত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধা সরাসরি অংশগ্রহণকারী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধ চলাকালে তিনি শিক্ষক ও ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে সেক্টর নাম্বার ৬ এ যোগদান করেন। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তিনি মঞ্চ ও থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে ‘রঙের ফানুস’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশনে অভিনয় জীবনের সূচনা হয়।
রাইসুল ইসলাম আসাদ
বরেণ্য অভিনেতা রাইসুল ইসলাম আসাদ। ১৯৭১ সালে নিজের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ঢাকার উত্তর বাহিনী নামে পরিচিত একটি গেরিলা দলে যুদ্ধ করেন।
দেলোয়ার জাহান ঝন্টু
চলচ্চিত্র নির্মাতা দেলোয়ার জাহান ঝন্টু স্বাধীনতা যুদ্ধে একজন সম্মুখসারির যুদ্ধা ছিলেন। ১৯৭১ সালে ১৩ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্বাধীন করে নৌকায় করে শীতলক্ষ্যা নদী পাড়ি দিয়ে হেঁটে ঢাকায় আসেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক পর ১৯৭৮ সালে তাঁর প্রথম ছবি 'বন্দুক' মুক্তি পায়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available