• ঢাকা
  • |
  • বুধবার ২রা আশ্বিন ১৪৩২ রাত ১১:০৪:২৬ (17-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:
সংবাদ ছবি

আফগানদের হারিয়ে এশিয়া কাপে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে জয়ের বিকল্প নেই। মাথায় সমীকরণের এমন চাপ নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। স্নায়ুর চাপ এসেছিল লাল-সবুজের প্রতনিধিদের সামনেও। সেই চাপকে সামাল দিয়েছে দারুণ দক্ষতায়। এশিয়া কাপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আফগানিস্তানকে বাংলাদেশ হারিয়েছে ৮ রানে।আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় বাংলাদেশ। ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান তোলে দলটি। জবাবে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানে থামে আফগানিস্তান।আফগান ইনিংসের প্রথম বলেই সেদিকউল্লাহ অটলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন নাসুম। রানের খাতা খোলার আগে নেই এক উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে উইকেট পেতে পেতেও পায়নি বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদের ডেলিভারিতে পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন ইব্রাহিম জাদরান। রিশাদ হোসেন মিস করলে বেঁচে যান জাদরান। পঞ্চম ওভারে অবশ্য নাসুমের কাছ থেকে রক্ষা মেলেনি তার। ৫ রান করে জাদরান বিদায় নেন। আবারও দৃশ্যপটে নাসুম, আবারও লেগবিফোর। ১৮ রানে ২ উইকেট হারায় আফগানরা।দলীয় ৫১ রানে গুলবাদিন নাইবকে সাজঘরের পথ দেখান রিশাদ হোসেন। ১৪ বলে ১৬ রান করে রিশাদ হোসেনের হাতে ফিরতি ক্যাচ দেন গুলবাদিন। ক্রিজে সেট হয়ে যাওয়া আফগান ব্যাটার রহমানউল্লাহ গুরবাজকেও বিদায় করেন রিশাদ। ৩১ বলে ৩৫ রান করে স্কয়ার লেগে বাউন্ডারির কাছে ক্যাচ নেন জাকের আলী। ৬২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা আফগানদের পথ দেখান আজমতউল্লাহ ওমরজাই।১৬ বলে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা ওমরজাইকে থামান তাসকিন আহমেদ, বানান সাইফ হাসানের ক্যাচ। আফগান অধিনায়ক রশিদ খান চেষ্টা করেছিলেন। ১১ বলে ২০ রান করে পরিণত হন মুস্তাফিজুর রহমানের শিকারে। ১৯তম জোড়া উইকেট তুলে একেবারে ছিটকে দেন প্রতিপক্ষকে। বাংলাদেশ পায় স্বস্তির জয়।বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজ নেন তিন উইকেট। তাসকিন, রিশাদ ও নাসুমের শিকার দুটি করে।ব্যাটিংয়ে শুরুটা হয়েছিল বিধ্বংসী। টি-টোয়েন্টিতে এমন বাংলাদেশকেই দেখতে চায় সবাই। আফগানিস্তানের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে প্রথম পাওয়ার প্লেতে রান রেট প্রায় ১০-এর ঘরে। কিন্তু এরপর খেই হারায় বাংলাদেশ। ভালো শুরুর ধারাবাহিকতা পরে আর ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশ। মাঝের ওভারে আফগান স্পিানারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তোলার গতি কমে আসে টাইগারদের। মিডল ওভারে আফগান দুই লেগস্পিনার রশিদ খান ও নুর আহমেদের ফাঁদে পা দিয়ে ৪ উইকেট হারিয়েছে তারা।পাওয়ার প্লের পরের তিন ওভারে আফগান দুই স্পিনার রশিদ ও মোহাম্মদ নবীর নিয়ন্ত্রিত বোলিয়ে বাংলাদেশের রানের গতি কিছুটা কমে যায়। অধিনায়ক লিটন দাস ও ওপেনার তামিম দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুইজনকে।তবে বিপদটা ঘটে ১১তম ওভারে এসে। দলীয় ৮৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওভারের প্রথম বলেই লিটন দাসকে ফেরান নুর। বাংলাদেশ অধিনায়ককে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন এই আফগান লেগস্পিনার। আম্পায়ার শুরুতে আউট না দিলে রিভিউ নেয় আফগানিস্তান। এতেই ১১ বলে ৯ রান করে সাজঘরে ফিরেন লিটন।অধিনায়ক লিটন ব্যর্থ হয়ে ফিরে গেলে হাফসেঞ্চুরির দেখা পান তানজিদ তামিম। ২৮ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি করেছেন তামিম। এরপর আর থিতু হতে পারেননি। তাকেও ফিরিয়েছেন নুর।১৩ তম ওভারের পঞ্চম বলে নুরকে ছক্কা মারতে গিয়ে লং অফে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তামিম। ৩১ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫২ রানের ইনিংস খেলে ফিরেছেন এই ওপেনার।এরপর রানের গতি আরো কমতে থাকে। দলীয় ১২১ রানে ফিরেছেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। রশিদ খানের বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পরেন তিনি। বাঁহাতি এই ব্যাটার ১১ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন।তাওহিদ হৃদয় কিছুটা হাল ধরার চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১৯তম ওভার ওমরজাইয়ের প্রথম বলে ডিপ এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ হয়েছেন ফিরেছেন হৃদয়। ২০ বলে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ১৩৯ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ডেথ ওভারে বাংলাদেশের আরও অধঃপতন হয়। শেষ ১২ বলে ৫ বল ডট দিয়েছেন নুরুল হাসান সোহান ও জাকের আলী অনিক।এর আগে সপ্তম ওভারে প্রথমবার আক্রমণে এসে আফগানিস্তানকে ব্রেক থ্রু এনে দেন রশিদ খান। আফগান অধিনায়ক রশিদ ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। ২৮ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ৩০ রান আসে সাইফের ব্যাট থেকে। হাত খুলে খেলতে শুরু করা সাইফকে বোল্ড করেন রশিদ। ৬৩ রানে শেষ হয় ওপেনিং জুটি।আফগানদের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেন রশিদ ও নুর। ওমরজাই পান এক উইকেট।সংক্ষিপ্ত স্কোরবাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৪/৫ (তামিম ৫২, সাইফ ৩০, লিটন ৯, হৃদয় ২৬, শামীম ১১, সোহান ১২*, জাকের ১২*;  ফারুকি ৪-০- ৩৭- ০, ওমরজাই ৩-০-১৯-১, গজনফর ৩-০-৩২-০, রশিদ ৪-০-২৬-২, নবী- ২-০-১৭-০, নুর- ৪-০-২৩-২)আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ১৪৬/১০ (অটল ০, গুরবাজ ৩৫, জাদরান ৫, নাইব ১৬, নবী ১৫, ওমরজাই ৩০, জানাত ৬, রশিদ ২০, নুর ১৪*, গজনফর ০, ফারুকি ২*; নাসুম ৪-১-১১-২, তাসকিন ৪-০-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২৮-০-৩, রিশাদ ৪-০-১৮-২, শামীম ১-০-১৬-০, সাইফ ৩-০-৩৯-০)ফল: বাংলাদেশ ৮ রানে জয়ী।