ইতালি প্রতিনিধি: স্বপ্নের ইউরোপে পা রেখেই শুরু হয়েছিল নতুন জীবনের যাত্রা। সেই যাত্রা আজ ইতালির সমাজে এক শক্তিশালী বাঙালি সম্প্রদায়ের জন্ম দিয়েছে। কেউ রেস্টুরেন্টের মালিক, কেউ আবার নির্মাণশ্রমিক। কেউ সংসার চালাচ্ছেন, কেউ পাঠাচ্ছেন দেশে রেমিট্যান্স। কিন্তু এই স্বপ্নপূরণের গল্পের ভেতরে আছে অগণিত সংগ্রাম, অবৈধতার আতঙ্ক আর বৈধতার দীর্ঘ অপেক্ষা।
১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে হাতে গোনা কয়েকজন বাংলাদেশি পাড়ি জমিয়েছিলেন ইতালি। ধীরে ধীরে এই সংখ্যা বেড়ে আজ কয়েক লক্ষে পৌঁছেছে। মিলান, রোম, ব্রেসিয়া, নাপোলি কিংবা ভেনিস—যেখানেই যান না কেন, চোখে পড়বে বাঙালিদের দোকান, হালাল রেস্টুরেন্ট আর ছোটখাটো ব্যবসা।
মিলানের রাস্তা ধরে হাঁটলেই চোখে পড়বে বাংলা নামের রেস্টুরেন্ট ও মিনি-মার্কেট। ইতালিতে এখন অনেক বাঙালি ব্যবসায়ী সাফল্যের সাথে ছোট-বড় উদ্যোগ চালাচ্ছেন। কেউ তৈরি করেছেন কমিউনিটি স্কুল, কেউ প্রতিষ্ঠা করেছেন মসজিদ, আবার কেউ স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে জনপ্রতিনিধি পর্যন্ত হয়েছেন।
কিন্তু সব গল্প যে সুখের, তা নয়।
ভিসার ঝামেলা: সাম্প্রতিক Decreto Flussi প্রক্রিয়ায় অনেকের পাসপোর্ট মাসের পর মাস আটকে রয়েছে।
অবৈধ অভিবাসনের কথা না বললেই নয়: লিবিয়া হয়ে সমুদ্রপথে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে আসছে অসংখ্য তরুণ।
ভাষা ও সংস্কৃতির একটি বড় বাধা। অনেকেই ইতালীয় ভাষা না জানায় চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, আইনি সাহায্য পেতে সমস্যায় পড়ছেন।
বাংলাদেশ ও ইতালি সরকার ইতোমধ্যেই একটি নতুন চুক্তি করেছে—যাতে বৈধভাবে শ্রমিক পাঠানো হবে এবং অবৈধ অভিবাসন রোধ করা হবে।
এছাড়া যারা ইতালিতে কাজ করছেন, তাদের সামাজিক সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞের মতে বাংলাদেশিরা এখন ইতালির অর্থনীতির অপরিহার্য অংশ। তাদের বৈধতা প্রদান করলে তারা আরও বেশি উৎপাদনশীল হবে এবং ইতালির কর ব্যবস্থায় বড় অবদান রাখবে।
ইতালির বাঙালি সম্প্রদায় আজ পরিবর্তনের এক মোড়ে। একদিকে সাফল্যের গল্প, অন্যদিকে অবৈধতার শঙ্কা।
কিন্তু একটাই সত্য—তারা ইতালির সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। তাদের এই সংগ্রাম ও সাফল্যের গল্প বলবে ভবিষ্যতের ইতিহাস।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available