• ঢাকা
  • |
  • সোমবার ৭ই আশ্বিন ১৪৩২ সন্ধ্যা ০৬:৩৭:১৩ (22-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ ৬৭ শিক্ষকের পদত্যাগ

২০ আগস্ট ২০২৪ দুপুর ০২:৩৯:১৬

সংবাদ ছবি

খুলনা ব্যুরো: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনসহ ৬৭ জন শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। ২০ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার পরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলরের সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগপত্র প্রেরণ করেন। এর আগে দুপুরে তিনি শিক্ষার্থীদের সাথে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

একই সাথে পদত্যাগ করেছেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরি। আরও পদত্যাগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি হলের প্রভোস্টবৃন্দ।

Ad
Ad

এছাড়াও পদত্যাগ করেছেন সিন্ডিকেটের দুইজন সদস্য, শারীরিক শিক্ষা চর্চা বিভাগের পরিচালক, আইকিউএসির পরিচালক ও অতিরিক্ত পরিচালকবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক। বিদায়ী রেজিস্ট্রার এসব পদত্যাগের কথা নিশ্চিত করেছেন।

Ad

এর আগে এক বদলির আদেশে জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. মঈনুল হোসেন, উপাচার্যের সচিব সঞ্জয় সাহা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. হাসানুজ্জামানসহ ১৩ কর্মকর্তাকে তাদের কর্মস্থল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দপ্তরে বদলি করা হয়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের এই পদত্যাগকে অনেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাত হিসেবে দেখছেন সাবেক, বর্তমান অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অনেকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীদের দাবি বা স্লোগান, অবরুদ্ধ রাখা, কার্যালয়ে তালা বন্ধ রাখার মতো ঘটনা ঘটলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ব্যতিক্রম। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও তার কাজের পরিচ্ছন্নতা, সততা ও শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেক এগিয়ে নিয়ে যাওয়াতে সবাই অত্যন্ত সন্তুষ্ট ছিল। কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে দলমত নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের চোখে তিনি ছিলেন ক্লিন ইমেজের। তাঁর সাথে উপ-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রারও ছিলেন ক্লিন ইমেজের। তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি। বলা চলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশেই রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে বিশ্ববিদ্যালয় যেন হতাশার ছায়া নেমে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী ফারহানা ইয়াসমিন আশা উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে বলেন, আমি মর্মাহত। কারণ, স্যার এই কোটা আন্দোলন অত্যন্ত সুন্দরভাবে সামলিয়েছেন। তিনি ক্যাম্পাসে পুলিশ প্রবেশ করতে দেননি। তিনি যা করেছেন তা আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে করতে পারেনি। তিনি সারাদেশে ভিসিদের মধ্যে উদাহরণ। তিনি খুবই ভালো শিক্ষক, গবেষক। আমি তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি মেনেই নিতে পারছি না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের সাদিয়া তো উপাচার্যের পদত্যাগের খবরে কেঁদেই ফেলেন। তিনি বলেন, আমি তো ভাবতেই পরছি না। স্যার, ওরিয়েন্টেশনের দিনে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং একটি সেশন পরিচালনা করেছিলেন তা আমার জীবনে বড় পাওয়া। আমি কখনও তা ভুলিনি। তাঁর সেই মোটিভেশনাল স্পিচ আমার জীবনের অনেক কিছুই মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। স্যার ভিসি হয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকলেও ক্লাস নিতেন। ঠিক ৯টার এক দু মিনিট আগে ক্লাসে ঢুকতেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী বলেন, উপাচার্য হিসেবে প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করার অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সাইফুদ্দিন শাহ্ বলেন, উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। দেশের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম ওবিই কারিকুলা প্রবর্তন, পিএইচডি গবেষণায় গুরুত্ব প্রদানে আমার কর্মমেয়াদে যে উদ্যোগ নিয়েছিলাম, তিনি সেক্ষেত্রে ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করেছেন। আইকিউএসিকে অত্যন্ত শক্তিশালী করেছেন। সার্বিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিয়ে গেছেন। আমি তার পদত্যাগ প্রত্যাশা করি না।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেবল শিক্ষা গবেষণা ও অবকাঠামোগতভাবেই এগিয়ে নেওয়া নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অবস্থান করে নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পরিবারের মতো পরিবেশ সৃষ্টির কারণে সকলের সহযোগিতা প্রাপ্তিতে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেনের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টারই ফসল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি মানুষের সীমাহীন আস্থার সৃষ্টি। আর এ কারণেই ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান পূর্ববর্তী ও পরবর্তী পরিস্থিতিতেও একমাত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসই রয়েছে রক্ষিত, যেখানে একটি ঢিলও ছোড়েনি কেউ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি যে উচ্চতায় নিয়েছেন এটা তারই নিদর্শন।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৫ মে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে যোগদান করেন প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। এছাড়া প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর উপ-উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন। ট্রেজারার হিসেবে প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরি ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট যোগদান করেন।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ


সংবাদ ছবি
শাপলা প্রতীক সরছি না, ১৫০ আসন পাবে এনসিপি
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:০৯:০৬

সংবাদ ছবি
ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৭৮
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:৫২:১৭

সংবাদ ছবি
শিবচরে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্যা
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:৩৫:৩৩

সংবাদ ছবি
নারায়ণগঞ্জে ময়লার ভাগাড়ে এনআইডি কার্ড
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:০৬:০৯

সংবাদ ছবি
আবারও ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ১ টাকা বাড়ছে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:৫৭:২৪


সংবাদ ছবি
৩৩টি পানির ফিল্টার স্থাপন করলো জবি ছাত্র শিবির
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:৩০:৫৫

সংবাদ ছবি
বিসিবি সভাপ‌তির চি‌ঠির কার্যকারিতা স্থগিত
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:২৬:০১



Follow Us