• ঢাকা
  • |
  • শনিবার ৫ই আশ্বিন ১৪৩২ সকাল ০৮:২৪:০৫ (20-Sep-2025)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

লালন ভক্তের ঘর ভাঙার প্রতিবাদে লালন আখড়ায় মানববন্ধন

২ জুলাই ২০২৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪:৪৩

সংবাদ ছবি

মিরপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় ফকির লালন শাহের মাজারের সামনে দাঁড়িয়ে লালন ভক্তের ঘর ভাঙ্গার প্রতিবাদে ও চায়না বেগমের ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি এবং পুনরায় একই স্থানে ওই ঘর নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন লালন অনুসারীরা।

২ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় বাউল সাধক ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেন লালনের ভক্ত-অনুসারীরা। তারা চায়না বেগমের ঘর ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি এবং পুনরায় একই স্থানে ওই ঘর নির্মাণের দাবি জানান।

প্রায় এক ঘণ্টা মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে চায়না বেগম বলেন, ‘সকাল হলে আমি ভিক্ষা করতে যাব। সারা দিন বেড়াব। দিন শেষে স্বামীর ভিটায় রাঁধে (রান্না) খাব। তবু স্বামীর ভিটা ছেড়ে কোথাও যাব না। আমার ঘর যেভাবে ছিল। আপনারা সেভাবেই করে দেন।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে আমার স্বামীর মাজার আছে। আমি সেখানেই থাকব। আমাকে যদি স্বামীর কবর থেকে সাপে খায়, বাঘে খায়, তবুও আমি ওই জায়গায় থাকব। মাটির সঙ্গে মিশে যাব। আমাকে কবর দিতে কাউকে আসা লাগবে না। তবু কোথাও যাব না।’

লালন ভক্ত চায়না বেগম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার টাকিমারা এলাকার মৃত গাজির উদ্দিনের স্ত্রী। গত ২৬ জুন সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও মাতব্বররা তার ঘর ভাঙচু‌র করেন বলে তিনি অভিযোগ করেন।

মানববন্ধনে চায়না বেগমের বোন ফকির আছিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার বোন যেখানে যেভাবে ছিল, আপনারা সেখানে সেভাবেই বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন। যারা আমার বোনের ঘর ভেঙেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

লালন ভক্তের ঘরবাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ফকির আলেক সাঁই। তিনি বলেন, দাঁড়ি রাখলে আর টুপি পরলেই মুসলমান হওয়া যায় না। মানুষ হওয়া যায় না। মানুষ হতে হলে আগে মনুষ্যত্বের অধিকারী হতে হবে। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৮০ বছর বয়সী চায়না বেগমের ইচ্ছা ছিল, লালন অনুসারী মৃত স্বামীর কব‌রের পাশে ঘর করে বা‌কিটা জীবন কা‌টি‌য়ে‌ দেবেন। ভিটেমাটিতে প্রতিদিন জ্বালাবেন সন্ধ্যাপ্রদীপ। নিজে লালন অনুসারী হওয়ায় স্বামীর কবরের পাশেই নিজ জমিতে তুলেছিলেন টিনের ঘর। কিন্তু স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম্য মাতব্বররা তাঁকে ওই স্থানে ঘর নির্মাণ করতে নিষেধ করেছিলেন। ভ‌বিষ‌্যতে ওই স্থানে মাজার, মাদক সেবন ও কিশোর গ‌্যাংয়ের আড্ডাস্থল হ‌ওয়ার আশঙ্কার কথা বলে ২৬ জুন সকালে ‌স্থানীয় আরও কয়েকজনকে নিয়ে বৃদ্ধার ঘর‌টি তাঁরা ভেঙে ফেলেন ।

চায়না বেগম ঘর ভাঙতে বাধা দিতে গেলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে তিনি এ বিষয়ে কু‌ষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ করেন। গত শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে বিকেল থেকে সন্ধ‌্যা পর্যন্ত থানায় উভয় পক্ষ বৈঠক করে। ওই বৈঠকে চায়না বেগমকে অন‌্যত্র এক‌টি নতুন ঘর তৈ‌রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্ত উভয় পক্ষ মেনে নেয়। কিন্তু পরে চায়না বেগম অন্য লালন ভক্তদের নিয়ে আগের স্থানেই ঘর নির্মাণের দাবি জানাতে থাকেন।

এলাকার বি‌ভিন্ন মানুষের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চায়না‌ বেগ‌ম ও তাঁর স্বামী মৃত গা‌জির উদ্দিন দু’জনেই ছিলেন বাউল ফ‌কির লালন সাঁইজির অনুসারী। মৃত‌্যুর পর গা‌জির উদ্দিনকে মাঠের মধ্যে নিজ জ‌মিতে কবর দেওয়া হয়।

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ


সংবাদ ছবি
নওগাঁ সীমান্তে দিয়ে ১৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সকাল ০৮:১৯:১৪








সংবাদ ছবি
বাংলার ‘টেসলায়’ অচল নারায়ণগঞ্জ শহর
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:০১:৩৭